লেবেল

বিন্দু সংখ্যা এগার


এবং ওরা শিল্প-সাহিত্য নিয়ে ব্যাবসা করে, পণ্য করে, ন্যাংটা করে, রক্তাক্ত করে, ট্রাকে তুলে আলু-পটলের মতো রপ্তানি করে; গুটিকতক অর্টিস্টিক শিল্পিকে আলু-পটলের ছাল খাইয়ে ভিখিরির মতো বাঁচিয়ে রেখে নিজেদের স্বার্থে মুনাফা উপার্জন করেই যায়; ইহাই প্রতিষ্ঠান, এই কাজ এরা অতীতেও করেছে- ভবিষ্যতেও.....?    না

এদের প্রথম ল্য মুনাফা, দ্বিতীয় ল্য মুনাফা, এমনকি তৃতীয় ল্যও মুনাফাএরা শিল্প-সাহিত্যের বিচার করে মুনাফার অঙ্কেমূলত এরা শিল্প ব্যাপারটাই বোঝে না; ভালো শিল্প নির্বাচন এদের কাছে কমোডের কালার চয়েজের মতো ব্যাপার
তাই অনিবার্যভাবেই শিল্পি এদের কাছে হাস্যকর বস্তুতে পরিণত হয়, শেষপর্যন্ত



বিন্দু
বর্ষ ছয়  সংখ্যা এগার  চৈত্র ১৪১৭

সম্পাদক
সাম্য রাইয়ান

নির্বাহী সম্পাদক
রাশেদুন্নবী সবুজ

প্রচ্ছদ
মুস্তাফা খালিদ এর স্কেচ অবলম্বনে

কম্পোজ
নান্দনিক, ২১৬, জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট, কুড়িগ্রাম

মুদ্রণ ও সার্বিক তত্তাবধানে
বাঙ্ময় প্রকাশনা, কুড়িগ্রাম

যোগাযোগ
সাম্য, কলেজ মোড়, কুড়িগ্রাম
ই-মেইল: editor.bindu@gmail.com
ব্লগ: bindu-bd.blogspot.com
মুঠোফোন: ০১১৯০২৯৫৬২১


বিনিময় পনের টাকা



বিন্দুস্বর
 শাদাকথা
আমরা কাগজ করি আমাদের চিন্তা প্রকাশের জন্যবিন্দু আমাদের চিন্তা প্রকাশের মঞ্চআমরা যা চিন্তা করি তা-ই প্রকাশের জন্য বিন্দু বেরিয়েছে-বেরুচ্ছে-বেরুবেবাবু সাহিত্যিকদের এলিট সাহিত্য চর্চার জায়গা বিন্দু নয়

আমাদের লেখা আমরা ছাপি, কার কি আসে-যায়
দ্বি-মত পোষণ করলে, লিখে উত্তর দিও তায়
আমরা মনেকরি যেকোনো চিন্তা-মতামত বিষয়েই মতভেদ তথা ভিন্নমত থাকতে পারেকিন্তু তা যদি যুক্তি নির্ভর না হয়ে একগুয়েমি কিংবা শ্রেণিস্বার্থ রার জন্য হয়, তবে তা আমাদের কাছে ভিন্নমত বলে গ্রহণযোগ্য হবে নাআর যেকোনো লিখিত প্রসঙ্গের ক্ষেত্রে লিখিত মতামতই আলোচনার যোগ্য হওয়া উচিতএতে লেখার প্রতিটি পয়েন্ট ধরে আলোচনার সুযোগ থাকেঅবশ্য কারো যদি লিখিত জবাব দেবার যোগ্যতা না থাকে, সেটা আলাদা কথাবিন্দুর দশম সংখ্যা নিয়ে ব্যাপক চিৎকার-চ্যাচামেচি শোনা গেলেও একটিও লিখিত সমালোচনা আমরা পাইনি
পৃথিবীতে স্বাধীন মত প্রকাশের সুযোগ কখনো ছিল না, আজও নেইভিন্নমত প্রকাশের জন্য সক্রেটিসকে দেয়া হয়েছিল হেমলক, ব্রুনোকেতো পুড়িয়েই...  এরই সর্বশেষ শিকার হুমায়ুন আজাদ। ...অনেকে আক্রান্ত; একই পথের যাত্রী
তবুও... আমাদের কথা আমরা বলবইযেভাবেই হোক আমাদের
চিন্তা আমরা প্রকাশ করবই; কবিতায়, গানে, চিত্রকলায়...
আমাদের চিন্তা প্রচারিত হবেইমাজার জোড় লেখাতেই প্রকাশিত হোক...

...এসব দেখি কানার হাট-বাজার
লালন সাঁইকে নিয়ে ভালো ব্যবসা ফেঁদেছে বাংলালিংকজাগরণের গান প্রকাশ করে মুক্তিযোদ্ধাদের বৃদ্ধাঙ্গুলিও দেখাল তারাই! আরেক দিকে গ্রামীণফোন আর এক জাতীয় দৈনিক মিলিয়া আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরণে অতিশয় ব্যতিব্যস্ত। (নিজেদের সৎ প্রমাণের চেষ্টা?) সাধু! সাধু!                             তাবিজবিজয়ীইউনুসদীর্ঘজীবিহোক!
লালন-আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ওদের পৈত্রিক সম্পত্তি নয়

চিৎকার-চ্যাচামেচি করার জায়গা এইটা নাস্লোগান লেখার জায়গা এইটা নারাজনীতিসচেতন সাহিত্য চর্চার জায়গা এইটাএখানে শেষপর্যন্ত লেখক একালড়াইটা শেষপর্যন্ত তাকেই করতে হয়Ñ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে- শেষপর্যন্ত সক্রিয় থেকে... ... ...



আরণ্যক টিটো

ফুলেরা পোশাক পরে না

হ্যাঁ, খুলে ফেলুন, স ব কি ছু , ফুলেরা পোশাক পরেনা! খুলুন,
একটু একটু করে.....
..............   .....................   ........................................
দেখুন আয়না, কী চমৎকার, যেন ভোরের শিউলি, সদ্য ফোটা,
শিশির ভেজানো ঘাসপথে পায়ে পায়ে হেঁটে এসেছেন,
শিল্প!
বলছেন, শেষ কবে খালি পায়ে শিশির ছুঁয়েছেন ? ভাবুন,
বাজারমহলে আপনিই আয়না !
ঘুরে দাড়ান, একটু...    হ্যাঁ,    আরেকটু, ...
আহ, কেমন সুডৌল ()() ইদানীং আপেলের দাম ভালো!
মাথা নত করবেননাএদিকে তাকান, হ্যাঁ, চোখ রাখুন, চোখে...
একচুমুক হাসুন, 
যেভাবে খুকিরা ললিপপ চোষে, আর হাসে, এমনই
............      .......................    ....................................
ঠিক আছে,  চলবে এটুকু
এবার হাঁটুন, ... ... ...  যেভাবে নদীরা বয়ে যায়, এ কেঁ   বেঁ   কে
এ ক টু দোলান....(!)(!) বাহ, বেশ খাসা....
দোলছে  বাজার, নাচের মুদ্রায়, কমলায় নৃত্য করে....
দোদুল দোদুল দোলে...(!)(!)
বাজার নৃত্য করে, বাজার বিত্ত করে, বাজার বৃত্ত করে
বাজারিকা,
আসুন, সভ্যতা আপনাকে চায়... ভ্রম করুন, মুক্তহাওয়ায়!
ভুলে যান পিছুলোক, পিছুকথা !
জানুক তাহারা, নতুন কথন ফুলেরা পোশাক পরেনা!



আরণ্যক টিটোর সাথে কথোপকথন

বিন্দু: আপনি কবিতা লেখেন কেন?

আরণ্যক: আমি আসলে কবিতা লিখিনা, যাপন করি! যাপিত জীবনের আনন্দবেদনাগুলোকে কথা রাগে প্রতিরাগে’ ‘বাদে’ ‘প্রতিবাদে ভাষা দিই!.. ভাষার মর্মরে বেজে ওঠে আমার সময় ও মেজাজ, রাজনীতি! প্রেম.. প্রতিপ্রেম, ..

বিন্দু: কবিতা লেখার ক্ষেত্রে আপনার প্রেরণার জায়গা আছে কি?

আরণ্যক: প্রেরণা নামক কারও সাথে আমার জমে ওঠেনি কখনও, .. আমার জীবন যাপনের অনুভূতিগুলো, ভাবনায়, ফুটে ওঠে কথার মঞ্জরি হয়ে.. সকল বিষয় প্রেরণার মর্মে ধরা দেয়, একক প্রেরণা থাকে না, .. একটু কাব্য করে বলা যায়, প্রতিদিন নতুন সুন্দরে প্রেমে পড়ে চোখ, সুন্দর! সে যে বহুতমা!

বিন্দু: বর্তমান বাঙলাদেশে লিটল ম্যাগাজিনর চরিত্র কেমন হওয়া উচিৎ বলে আপনি মনে করেন?

আরণ্যক: কি উচিত কি নাউচিত! এই বিষয়টা ভার করে মেজাজের উপর, বোধের উপর! কারা কী ভাবে বোধের পরিধি প্রকাশ করবে সেটা নির্ভর করবে তাদের দলগত চেতনার বাদ্যে, .. আমি যেটা অনুভব করি, লিটল ম্যাগাজিন একটা দার্শনিক মেজাজকে লালন করে বেড়ে ওঠে, .. এই মেজাজ সময় ও রাজনীতিময় জীবন প্রকাশের কাঙখাকে ধারন করে, .. দলগত বাদ্য ছাড়াও লিটল ম্যাগাজিন হতে পারে, একা একজন! একটা লিটল ম্যাগাজিনযেমন, মাইকেল, রবিন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দসময়ে সময়ে তাদের শিল্পের দর্শন পরিবর্তন করেছেন শিল্প ও জীবন দেখার ভঙিমা।.. কিন্তু, চর্যাগীতিকা, বৈষ্ণবসাহিত্য, আমাদের বাউলফকিরমুর্শিদজারিসারি সাহিত্যের দলগত চর্চা লিটল ম্যাগাজিনের চরিত্রকে ধারণ করে, .. যারই সময় ও মেজাজে প্রবাহিত আমাদের মধ্যবিত্ত মন ও মানস কাঠামো! আসলে তত্বের তাত্বিক বিরুদ্বাচরণতার নামটি, লিটল ম্যাগাজিন! 

বিন্দু: প্রতিষ্ঠান বিরোধীতা বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখেন?

আরণ্যক: পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রময় প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান বিরোধীতা আসলে ফ্যাশন না! প্রতিষ্ঠিত, নির্মিত সত্যের প্রতিসত্যময় জগৎ দর্শন, এর মর্ম! ভাবনার বিপরীত ভাবনাকে জাগাতেই প্রতিষ্ঠান বিরোধতা নম্যঃএর বেঁচে থাকা বিপ্লবের মহত্তর ল্য, ..

বিন্দু: আপনিতো প্রায় দশ বছর ধরে চারবাক সম্পাদনার সাথে যূক্ততো এই মূহুর্তে চারবাক নিয়ে কি চিন্তা করছেন?

আরণ্যক: যুক্ত? যুক্ত হতে এসে বাঁধা পরলাম, মুক্তনীলিমায়! এই মুক্তনীলিমায় সম্পাদনা বিষয়টি নিয়ে আমি ভাবছিনা, ভাবনার গোচর রয়ে যায় অন্যখানে, অন্যতানে, কথায় কথায়, .. এই তানটুকু সম্প্রিতি, দলগত চেতনার। .. এই মঞ্চে আমি কথা  বলেছি, .. এখন আসলে সেভাবে কাজ করতে পারছিনা! আমরা আসলে ব্যক্তিগত জীবনযাপনে এত বিচ্ছিন্ন যে আগের মত আর নিজেরা বসতে পারছিনাআমি আসলে নিজেও সম্পাদনা, পত্রিকা করা এসব বিষয় উপভোগ করছিনা! বিপরীতে আমাদের মধ্যে আমার যে সৃজনশীলতা সে জায়গায় আমি উপভোগ করছি, সুতরাঙ আমি এ জায়গায় মজে আছি, .. চারবাক হচ্ছে, হবে, .. হয়তো আমি আর সম্পাদনার সাথে যূক্ত থাকবোনাকিন্তু, ম্যুভমেন্ট, লিটল ম্যাগাজিন চেতনা, দলগত বাদ্যে আমি বেজে যাবো, প্রতিসত্যে!

বিন্দু: এদেশের সাম্প্রতিক কবিতা সম্পর্কে আপনার পাঠ প্রতিক্রিয়া জানতে চাচ্ছি

আরণ্যক: সাম্প্রতিক শব্দটির মাঝে একটা সীমাবদ্বতা আছে! এই সীমাবদ্ধতার মাঝে আমি আনন্দ পাইনাআমার পাঠের মাত্রাটি একটু অন্য রকম! সমকালে অনেক কবিতা লেখা হচ্ছে, যতোটা চোখের আবহে ধরা পড়ছে ততোটা পরছিসাম্প্রতিক ভেবে পরছিনাএই পাঠটুকু আমাকে বলে, পড়ো, তোমার বোধের নামে, .. এই বোধের আলোয় দেখি, কিছুই হচ্ছেনা! যা হচ্ছে তার অধিক প্রচল, এর ভেতরেই প্রবাহিত, একটি গোপন স্রোত কিবা একটি নদীর সম্ভাবনা, .. এই সম্ভাবনা অতীতেও ছিল,  যা আজ বর্তমান কিবা প্রচল! এই না হওয়ার ভেতরেই গোপন স্রোতটি হলো, সম্ভাবনা, উত্তরণের কাব্যগাঁথা, .. একটি গোপন কথা আজ বলে দিই; আমি আসলে কবিতা কে জানিনা, তবে এইটুকু জানি, অচেনা চোখের ক্যানভাসে কতো রকমারি ভাষা আছে, অর্থ আছে, অর্থহীনতার ..
এটুকু,
আমার পাঠের গোচর থেকে বলা, পাঠের বাহিরে আরও কত না পাঠ রয়ে যেতে পারে অগোচরে, ..



ম হাসান

আখ্যান

যাদের জীবনের গান শোনাতে চাই, / তারা আশে পাশে কোথাও নেই এখন। / কেবল কতগুলো নির্বাক দেয়াল, / কিছু ব্যবহৃত আসবাব, জানালা / আমার নিত্যসঙ্গি আজকাল

অসময়ে খুব বৃষ্টি হচ্ছে বলে আকাশকে দোষ দিতে দিতে যেসব নাগরিকেরা তাদের ধোপদুরস্ত পোষাক বাঁচিয়ে রোজ রোজ অফিসের পথে নামে, তাদের দামী জুতোর পায়ের নিচে এ শহর কোন অভিযোগ ছাড়াই কেমন নীরব, সর্বংসহা টিকে আছেকিন্তু হঠাৎ বর্ষা বিব্রত করে সহায়-সম্বলহীনদেরই বেশি, যাদের ঘরের চালে ফুঁটো, কিংবা যাদের হয়তো ঘরই নেইশহরে বৃষ্টি তাই কখনো কখনো অনাহুত
প্রবল বর্ষণ ডুবিয়ে দিচ্ছে রাস্তা-ঘাট, সড়কের দুধারে পানির স্রোতের তীব্রতায় ভেসে যাচ্ছে ময়লা-আবর্জনা, শোলা, খালি প্যাকেট, পাতা, আরো কতো কি! ছোট গাড়িগুলো চলছে ধীরে ধীরে পানির বাধা ঠেলে সাবধানেবাসগুলোর অবশ্য ভদ্রতার বালাই নেই, বেশ জোরেশোরেই ছুটে যাবার চেষ্টাএসব থেকে একটু দূরে স্রোতের উপর দিয়েই ভেসে যাচ্ছে এক পাটি প্লাস্টিকের স্যান্ডেলবৃষ্টির পানিতে ধুয়ে বেশ পরিচ্ছন্ন চকচকে চেহারা নিয়ে স্যান্ডেলটা নৌকার মতো ভেসে চলেছে স্রোতের টানেস্যান্ডেলের নিজস্ব কোন গন্তব্য থাকেনা, পথিকের গন্তব্যই তার আপন গন্তব্যকিন্তু এই স্যান্ডেলটা যেন পূর্ণ স্বাধীন এবং আত্মভোলাযদিও স্বেচ্ছা ভ্রমণ নয় এ, স্রোতের টান যেদিকে নেবে সেদিকেই যেতে হবে, তারপর কোথাও আটকে থেকে পানি নেমে যাবার জন্যে অপো অথবা ড্রেনের পানির সাথে ভেসে হারিয়ে যাওয়া অজানায়সারাজীবন পায়ের নিচে থাকা পুরনো, পরিত্যাক্ত স্যান্ডেলটাকে তাই কেমন সুখে ভাসমান দেখায়কিন্তু কে জানে, সেটা পরিত্যাক্ত নাও হতে পারে, হয়তো অসাবধানতায় খোওয়া গেছে কোন পথিকের পা থেকেপ্লাস্টিকের কম দামী স্যান্ডেল, তাই ধারণা করা যায়, কোন গরীব পথিকের সম্পত্তি ছিলোখোওয়া যাওয়া এই সামান্য সম্পদের ফলে কতোখানি সমস্যায় পড়লো সেই লোক, কে জানে? অন্তত, এখন এই উচ্ছল প্রবাহমানতার ভেতরে তা ভাববার অবকাশ খুব বেশি নেই  

হারিয়ে যাবার আগে / কোন শেষ চিঠি লিখে যাওনি তুমি। / তোমার নিরুদ্দেশ বার্তায় তাই, / অন্য কারো  সতর্ক  স্বার
তবে বৃষ্টি যত প্রবলই হোক, যতণ ধরেই বর্ষণ হোক, একসময় তা থামে, আস্তে আস্তে পানি সরে যেতে থাকে, আর বালি আর আটকে থাকা নোংরা-আবর্জনা নিয়ে জেগেওঠে পিচের সড়ক কালোতখন স্যান্ডেলটা আটকে আছে রাস্তার কোণায়, ময়লার সাথেইএক পাটি স্যান্ডেল, একাতারপর একসময় আসে টোকাইয়ের দল, ছোট-বড় নানা বয়সী ছেলে-মেয়েওদের কাঁধে ধরা বড় বড় বস্তা, তার ভেতরে কুড়িয়ে নেয়া নানা রকমের জিনিসসেই দলের কেউ একজন হাতে তুলে নেয় স্যান্ডেলটা, নেড়েচেড়ে দেখে, খালি পায়ের একটাতে ঢুকিয়ে দেখে-নাহ, পায়ের মাপের তুলনায় অনেক বড়কি ভেবে সে পা থেকে খুলে জিনিসটা বস্তায় ঢুকিয়ে নেয়তারপর সদলবলে চলে যায় ওরা

যখন জেগে উঠলাম, দেখলাম উপরে / গাছপালার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে চাঁদ, / আমার পিঠে বিঁধছে ঘাসের ডগা। / ভয়ে চিৎকার করে উঠবার বদলে / আমি চোখ বুজলাম পরম শান্তিতে

এরপর স্যান্ডেলটার কি হলো তা আর জানা যায় নাকল্পনা সবখানে পৌঁছোয় না সবসময়, যেহেতু ঘটমান বর্তমানও পর্দার ওপারে অদৃশ্য হয় বারবার, অন্তরালে অন্য আখ্যানের জন্ম হয়, তারপর আপন গতিতে বিকশিত হতে থাকে



 নাসিমূল আহসান

মোবাইল বনিকেরা, সরিয়ে নাও ঘাতক থাবা!

আমাদের চিলেকোঠার দখল নিয়ে যাচ্ছে মোবাইল কো¤পানিগুলোএকদিন যে চিলেকোঠায় দাঁড়িয়ে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখতাম আমরা, ভিজতাম বৃষ্টিতে; সেখানে এখন গ্রামীনফোন-একটেল-বাঙলালিংকের ধাতব টাওয়ারচিলেকোঠায় ঘর বাঁধার বাউন্ডুলে স্বপ্ন এখন আর তাড়িয়ে বেড়ায় না আমাদেরএর চেয়ে লাভজনক চিলেকোঠাগুলোকে বিক্রি করে দেয়া বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কাছেআমাদের ধানতে জুড়ে পা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে দানবের মতো মস্ত মস্ত টাওয়ারএকসময় আমাদের দিগন্ত জুড়ে দেখা যেত তাল-নারিকেল গাছের সারি; এখন যান্ত্রিক টাওয়ারভেঙে পড়ছে আমাদের সব তালগাছের সারি; নির্মিত হচ্ছে লোহারক্করে বানানো দানবআমাদের চিলেকোঠা; আমাদের ধানতে দখল করে নিচ্ছে ওরাব্যস্ত সড়কের মাথায় ঝুলিয়ে দিচ্ছে পণ্যনারীর মুখশোভিত বিলবোর্ডঢেকে যাচ্ছে দিগন্ত; আকাশের নীল; মেঘের লুকোচুরিআমাদের সবুজ চুরি করে মোবাইল বণিকেরা তাদের বিজ্ঞাপন বসাচ্ছেপণ্যনারীর মুখ আর জঙঘার সৌন্দর্যে ভরিয়ে দিচ্ছে গোটা বাঙলাদেশ
আমার কেউ বিলবোর্ড দেখতে চাই নাআমরা আকাশ দেখতে চাইআমরা আবার চিলেকোঠায় দাড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে চাইটাওয়ার দেখিয়ে নয়; তালগাছের সারি দেখিয়ে চিহ্নিত করতে চাই আমাদের মায়ামাখা গ্রামকেমেঘ আর চাঁদের লুকোচুরির বদলে আমরা আর বিলবোর্ড দেখতে চাই নাসেবার মুখোশে আমরা আর লুন্ঠনের আওয়াজ শুনতে চাই না টেলিভিশন আর সঙবাদপত্র জুড়েআমাদের আকাশ ফিরিয়ে দাওআমাদের চিলোকোঠা ফিরিয়ে দাওআমাদের সবুজ গাছপালা আর ধানেক্ষেতের সৌন্দর্য ফিরিয়ে দাওসরিয়ে নাও ঘাতক থাবা!



রাশেদুন্নবী সবুজ

ওরা বিশ্ব মাতুব্বরের কা-কা শব্দ শুনেছিল
উৎসর্গ: অজানা রক্তের প্রথম ফোঁটাকে

আলো থেকে অন্ধকার পর্যন্ত কারফিউ / বেতারে প্রচারিত হচ্ছে সাধারণ জনপদের ঘটনা / আর শকুন আর কুকুর আর শেয়াল খেতে খেতে বমি করছে / গত দুদিন / বাইরে পা বাড়ানো যাচ্ছে না / হিমালয় শৃঙ্গে বাতাসের শো শো শব্দ শোনা যায় / ভয়ানক ঝড়ের সাথে বুলেট বৃষ্টি হচ্ছে পূর্বাভাস ভেঙে / হঠাৎ আতঙ্কিত বেড়াল গলায় কাঁটা বিঁধে কাঁশছে / মেঘের আঙিনায় ভয়, বাতাস_জোৎস্না_জল কাঁপছে / কাঁটাতারের বেড়ার ওপাশে অপহৃত সূর্য আটকে আছে অপোয় / কাঁদতে কাঁদতে লাল হয়ে যাচ্ছে মাটি ও পিচ ঢালা খয়েরি সড়ক / নিখর্ব জোড়াজুড়ির পরও চোখ দেয় নাই এক ফোঁটা জল / শুধু তাকিয়ে ছিল পঁচা গলা নষ্ট হয়ে যাওয়া চোখের ভালোবাসা /

পরদিন পত্রিকার পাতায় কিছুই ছাপা হলো না.. বুলেটথশব্দথ জোৎস্না_কাঁটাতার কিছুই না / আমার প্রতিবাদ অবরুদ্ধ_আমার কণ্ঠে বেড়ি পড়ানো_হাতে ধরিয়ে দেয়া গ্রেনেড (হয়তো অকেজো) অপরাধী_কোমড়ে মোটা রশি_প্রসাবের কটু স্বাদের সাথে শুকনা রুটি_বরফ পিঠে মিথ্যে কথারাও ফুটফুটে সত্য হয়ে বেরিয়ে আসে অনায়াসে / এখন এই অন্ধকার বদ্ধভূমির পুরাতন বাসিন্দা আমি.. /



শব্দগুচ্ছ  এক

সমকালীন গ্রাম্য বালক পিছিয়ে পড়ে গিগাবাইট গতিতে
আর আমি এক পেয়ালা আলোয় চুমুক দিতেই থ..
অন্তর্জালে আটকে পরে রূপালি জোছনার স্রোতে ভাসা
পাহাড়ি সভ্যতা; রানারের আত্মচিৎকারে নিভে যায়
লণ্ঠনবাতি; সুন্দরী শরীরর রঙ নীরবতা কাঁপিয়ে দিয়ে
চঞ্চলতা ওঠায় শিল্প নগরীর শ্রমিক বিদ্রোহে

আহ! বিষাক্ত মৌসুমী আলো পুড়িয়ে দিতে চাইছে ভেতরটাকে..

 

শুভ্র সরখেল

কবর

তখন অবশ্য অন্ধকার ছিল
কেন জানি অক্সিজেনের বড়ই অভাব অনুভূত হচ্ছিল
নড়াচড়ার কোন পন্থা ছিলনা
ছিল শুধু সাদা চাদরে মাখা আতরের গন্ধগুলো

পৃথিবী যখন আকাশকে চুম্বন করার সাহস দেখায়
আমি তখন ঘুমিয়ে-শুয়ে চোখদুটো বুজেছিলাম

আমি কিছু দেখতে পাচ্ছি না
আমাকে কবর থেকে তুলে আনো


একটা চিরকুট

বর্তমানগুলোকে পিষছিলাম
মঙ্গলের ভবিষ্যত ভাবনায়
        বিভোর তখন আমি
হাঁটছিলাম শ্বেত প্রকৃতির মধ্যপথে
যেখানে সবুজ ঘাসের কোন চিহ্ন ছিল না
ছিল শুধু হায়ারেগ্লিফিকের হাহাকার চিত্র
চারদিকের মাথা উঁচু করা বৃক্ষ
রসহীন পল্লব আর শ্বেতমাটিদানাগুলো
আমাকে হিমোগ্লোবহীন টিকটিকি বলছিল
পৃথিবীর রুহ আর বেশিদিন নেই
তাইতো মঙ্গলে দোতলা বাড়ির কাজে বেরিয়েছি
দোয়া করবেন, মঙ্গলের খোঁজে যাচ্ছি..



নুরে আলম দুর্জয়

ভূমিকম্পের রাত

ভূমিকম্প আমাকে যখন দোলা দিচ্ছিল
তখন আমি যেন সমুদ্রের ঢেউয়ের ডগায় ভাসছিলাম
ভূমিকম্প শেষ হয়ে গেলে কিংবা ঘোর কেটে গেলে
কোনো এক অজানা নৈঃশব্দ আমাকে বলে যাচ্ছিল-
আজ ভবনের নিচে চাপা পড়লে মন্দ হতো না!


অবশেষের শেষ

শামুকের ফাঁকে লুকিয়ে থাকা সমুদ্রের ফেনা
তোমাকে খুঁজবে না আর কখনো
একদিন হয়তো শামুক কুড়াতে গিয়ে দেখবে
সমুদ্র থেকে বিতাড়িত সেই লেপ্টে থাকা ফেনা

তারপর হয়তো তুমি মাকড়শার জাল ভেবে মুখ ফিরিয়ে নেবে
আর ভাববে পৃথিবীটা এতো নোংরা কেন
কিংবা ধিক্কার জানাতে থাকবে
হয়তো কখনো মুখ ফসকে বেরিয়ে আসবে-
এই অবশেষের শেষ কোথায়? শেষ কোথায়!


সাদাটে শাড়ি

রাতের রাস্তায় নিয়ন আলোর নিচে
হালকা কুয়াশা ধুলী হয়ে উড়ে
যেন তোমার ওই শরতের সাদাটে শাড়ি
মনে হচ্ছিল আমি আর ওই শরতের
সাদাটে শাড়িখচিত আকাশ
কোনো এক সময় যুথবদ্ধ হয়ে গান ধরেছিলাম

তবু এই নগরের ধুলোময় ব্যস্ততা থামাতে পারে না
রাতের গুঞ্জন আর এই অহেতুক পথ হাঁটা..



জিয়াবুল ইবন

ছায়ার দৈর্ঘ্যে অসমাপ্ত একাত্তর

একটি চারাগাছ-
একাত্তরের উর্বর মাটি ফুঁড়ে উঁকি দেয়
                 পুব আসমানে
তারপর বছর বছর
গা-গতরে বয়স বাড়ে
                 ফল ধরে না

উপযুক্ত যতœ আর পরিচর্যা নেই
পত্রেপুষ্পে বিকশিত হয়ে
                         মাথা তুলে
                         দাঁড়াতেই পারছে না
                         গাছটি



রইস মুকুল

মুক্তবাজার

ইচ্ছের মড়ক চলে আমাদের-
         সব কালে আকালের নামে
             কাটে না আন্ধার প্রতারণার সময়ে
প্রথা ভাঙনে বিলোপ জমিদার
         অগতির পোড়াকাঠ রায়তেরা,
              হাঁড়ি-বাটি বিকিতেও কুলোয় না আর
                  এনজিওর কিস্তি পরিশোধে-
বউ-জিয়ারীর শরীর লাগে
ওতপাতা খরিদ্দারের ঘরে মুক্তবাজারে
ওএমএস-এর মোটা চলের ভাত-
                  যতো না নিস্বাদ
               সবজির হাট পুরোটাই দালালের দখলে,
            অপুষ্টির জলছাপে যাপন কাটে
         শুকনো ঠোঁট বারাবার চেটে
     লালাশূন্য বিবর্ণ জিহ্বা
তনজিম আতিক


পোড়ার স্বভাবে পোড়ায়

কাঠ চেরাইয়ের ভূসির আগুনে ভাত রাধিস
আমি পুড়তে দেখি তোকেই

আজন্ম পোড়ার স্বভাব তোর
পুড়ে পুড়ে খাঁটি হলেও
পুরুষ মানসে তুই ফেলনাই!
ওতেই তোর আত্মতুষ্টি
আমাকে অবাক করলে ঢেড় বেশি অবাক তুই

দেখনা-
ভূসির অগুনের উত্তাপে আমাকে পোড়াতে পারিস কিনা



রুদ্র শায়ক

কালো গোলাপ চাষ প্রকল্পের ভাবনা ও মিথস্ক্রিয়া

মনে রেখ অন্ধকার আর ভীষণ ঠান্ডার এই উপত্যকাজুড়ে
শুধু দুঃখ-কষ্ট প্রতিধ্বিনিত
                -ব্রেখ্ট, দ্য থ্রি পেনি অপেরা

সারাদিন ঘুরাঘুরি, নিজের সাথে নিজের দ্বন্দ্ব, ছুৎমার্গের কেরিক্যাচাল..
ভাষা ও মতার শৃঙ্খলে শব্দ ধাঁধার সাথে জটিল পোদ্দারী
তত্ত্ব, তথ্য, ধারণা, মতবদের দাসত্ব নয়, এই সব আমার জন্য
ভেলা, কাঁধে চেপে বহে বেড়াবার জন্য নয় বরং তাকে
চেপে নদী পার হবার জন্যই, রাত জেগে জেগে হস্তির
বিষ্টার মত আমার নিরন্তন পৃষ্টার পর পৃষ্টা পাঠ ও লিখা
নতুন ভোরের স্বপ্নখামে উত্তর(post) অথবা নতুন(New)
কোন চিন্তার প্যারাডইম দিবে নয়া কোন বাঁকসেই বাঁকে
অপরূপা কবিতাদেবীর স্নিগ্ধতা শান দিবে দেবীর চিবুক

বর্তমান মতাবানদের সবচেয়ে কার্যকরী অস্ত্রের নাম মিডিয়াএর হাত থেকে রেহাই পায়নি আমাদের মায়া-মমতা, আবেগ-ভালোবাসা, প্রেম-দ্রোহ, দহন, এমনকি হৃদয়ের সূতিকাগার কবিতাও, মিডিয়া সহবাসের দাপাদাপিতে আমাদের কবিতা যেন বাল্য বিবাহে শিকার শ্বশুর বাড়ির অত্যাচারে অতিষ্ট কুড়িতে বুড়ি হওয়া মেয়েটি অপোকৃত স্বাধীন মত ও চিন্তা প্রকাশের একটি কার্যকর পাঁতন সংকোচিত হয়ে আছে আমাদের সাহিত্য বিকাশের উদিত চত্বরে, গণতান্ত্রিক লেবাসে স্বাধীন মত প্রকাশের জিকির তুললেও সারা পৃথিবীতে মূলধারার গণমাধ্যমগুলো বিজ্ঞাপন নামের কলকব্জার স্বার্থের কাছেই গভীর আন্তরিকতায় অনুগত, অপর দিকে আধা পুঁজিবাদী-আধা সামন্ত সংস্কৃতি প্রভাবিত প্রান্তিক পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলোর প্রধান গণমাধ্যমগুলো, সেটি সংবাদপত্র হোক আর রেডিও টিভি হোক এখনও প্রবলভাবে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত, এবং প্রত্য পরোভাবে সামরিকায়িত ডগার চোখের কাছে বন্দিএ রকম পরিস্থিতিতে সীমিত পরিসরে প্রকাশিত ছোট কাগজ (লিটল ম্যাগাজিন)ই আমি ও আমাদের অন্যতম ক্রিয়াশীল হাতিয়ারশীতাতপ নিয়ন্ত্রিত খুপড়ি গড়ে প্রথাগত হিরোইজমের ঘেরাটপে হারিয়ে যাবে পলিজমা এই ভাঁটি অঞ্চলের কৃষকের ঘাম ঘরানো মহত্ব গাঁথাদৃশ্যত বিলুপ্ত প্রায় কবিগান, যাত্রাপালা, ঘাটুগান, ভাটিয়ালি ও ভাওয়াইয়াআমাদের কাব্যমন্দির থেকে চলে যাচ্ছে লোকগাঁথা, পুরাণ, মিথ, লিজেন্ড, পেস্টোরাল সিম্ফানি, মাটিবর্তী মানুষের শাণিত কণ্ঠস্বরস্থানিক স্বরন্যাস আজ আর খুঁজে পাওয়া যায় না কর্পোরেট দানব গ্রাসের কারণে আমাদের দেউড়ীঘরে, প্রান্তিক সংস্কৃতি আজ বিমুখ উন্নসিক স্রোতের তোড়ে
প্রান্তরের স্বপ্নে আজও জেগে আছি বাঙলার লাঠিয়াল সবুজ শ্যামল ছায়ায়এই গাঙ্গেয় বদ্বীপে আজও চতুরক বাণিজ্য বাতাস বইছেনদী বিধৌত নগর অঞ্চলের কারণে কৌম সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছেমহাকালের স্রোতে আর নয় সরল বা এক রৈখিকতা, স্রোতের প্রখরতা যেখানে বেশি, বাঁক বদলের তাগিদ সেখানেই তীব্রসেখানেই বড় মাপের ভাবনার জোয়াল ভাঙেপ্যারাডাইম শিফট (Paradigm Shift) এখানেই ঘটেঅদ্বৈতবাদ এখানেই হয়ে যায় একাকার, মহাকালই হোক আর কালই হোক, যেভাবেই ডাকি না কেন বই সময়ের ধারাকে, এটি যে কাল হয়ে কখনো দাঁড়ায়নি মানুষের সামনে, প্যারাডাইম শিফটই তার প্রামাণ, এই বাঁক বদলের ধাপে ধাপে সভ্যতা এগিয়ে যায়এই কাজ মিডিয়া ম্যানিপিউলেটর এর মাধ্যমে সম্ভব নয়, সংস্কৃতি অধ্যায়ন (cuttural studies)ই শ্রেষ্ঠ পদ্ধতিপাহাড় ডিঙানো বা সমুদ্র সেচাঁর মতো কঠিন মনে হতে পারে এই কাজBut I think that, practices frequently easily you can desire the goal. ভূ-সংস্কৃতি অধ্যায়নের জন্য রেপ্রিজেন্টেশনের ধারনাকে আমরা অর্থপূর্ণ করে তুলতে পারি, ফার্দিনান্দ ডি সস্যুর প্রভাবিত সেমিওটিক এ্যাপোচ এবং ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ডিসকার্সিভ এ্যপোচ কে এ্যাক্টিভেট করার মাধ্যমেসমুজ্জ্বল অবাক দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে আছি কালের ভেলা... গভীরতম হৃদয়, অনুভূতি নিয়ে যাবে এ ভেলা মহাকালের পথে, কথাটি কিছুটা বিতর্কিততবু কবিতা সময়ের চাহিদা মিটিয়ে চলে যাবে মহাকালের মঞ্চেবিশেষ মুহুর্তের উন্মাদনার ভেতর থেকে কবি তার চমৎকার কবিতাটির ভাষা দেনএই প্রকল্পের অনুকম্পে একটি শব্দের পর আর একটি শব্দের মাধুলী গাঁথার ঠিক এক সেকেন্ড পূর্বে কবিও জানেনা তিনি পরের শব্দটি কি লিখবেন, এ যেন এক ঐশ্বরীক মতা কবির মনন চিত্তজুড়ে, কিন্তু অল্পতেই আমাদের দম ফুরিয়ে যায় জ্বলে ওঠেই আমরা নিভে যায়ইশাস্ত্রজ্ঞানের চাতালে ঔপনিবেশিক বেড়ী আমাদের মন মাজারে, শত বছরের চিন্তার দাসত্ব কাঁধে আমরা নুয়ে পড়ি ফেরারি ইতিহাসের ইশতেহার নিয়ে

এখনই মোম সময়, শূন্যতার ভরাট তত্ত্বে এসে কবিতার ম্যাপ পূর্ণ করারকাব্যবীজানুর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় প্রথাসর্বস্বতা ও মতায়নের বিপরীতে মঙ্গলবোধের প্রদীপ হাতে যুথবদ্ধ প্রপঞ্চের মিথক্রিয়ায়

উড়ে যেতে প্রস্তুত আমার ডানা,
আমি চাইব ঘুরে যেতে
সময়হীন সময় যদি থাকে,
আমার থাকবে ক্ষীণ সম্ভাবনা
         -গেরার্ড শোলেম



বাক্সময় এর প্রস্তাবিত ভ্রুণ ঘোষণাপত্র (খসরা)

বেকন যখন সরবে ঘোষণা করেন, জ্ঞানই শক্তি (কেননা জ্ঞান মতাকেন্দ্রের সাথে যুক্ত)-দ্বিমত করার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে নাএকথা তো সত্যি, জ্ঞান নামক হাতিয়ার যার কব্জায়, সে তাকে ব্যবহার করতে চাইবেইতবে শক্তিমানের স্বার্থই ন্যায়? (ডায়ালগে সক্রেটিসের বিখ্যাত উক্তি)প্রাগৈতিহাসিক কালেও ব্রাহ্মণরা বেদ নিজের কব্জায় রেখে লোকদের শাসন করেছেজোয়ার-ভাটা সম্পর্কে যার সঠিক ধারণা ছিল, সে ইচ্ছে করলেই অন্যদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো

এবং আ জ ও
আজও কি বদলেছে এই অবস্থা? মোটেও নাবুর্জোয়ারা তাদের নানা রকম প্রতিষ্ঠান থেকে চিন্তা প্রকাশ করে এমন ব্যবহার করছে যা সাধারণ পাঠকের পাঠমতার বাইরেআর তারা সস্তায় জনগণের হাতে চটি তুলে দিচ্ছেফলে এদেশের অধিকাংশ জনগণের কাছে সমৃদ্ধ চিন্তা পৌঁছচ্ছে না; অথবা এভাবে বলা যেতে পারে, জনগণকে জ্ঞান অর্জন থেকে বিরত রেখে তাদের শোষণ করার জন্যই এ ব্যবস্থা

কিন্তু আমরা চাই পরিবর্তনআজকের অবস্থা পাল্টে এমন প্রকাশনা যা এদেশের সাধারণ জনগনের কাছে সমৃদ্ধ চিন্তা প্রচার করবে
আমরা জানি আমাদের কী করা উচিতআমরা বুঝে গ্যাছি এদেশে ধান্দাবাজির নানা রঙকিন্তু তা কেবল নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে জনগনের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমাদেরহ্যাঁ; সেই দায়িত্ব আমরাই কাঁধে তুলে নিয়েছি



শ্রেনিহীন সমাজ নির্মাণের স্বপ্ন থেকে, গণউন্নয়নকামী
চিন্তা প্রকাশের মঞ্চ
হিসেবে আমাদের ক্ষুদ্র সামর্থ্যে ক্ষুদ্র উদ্যোগ

বাঙ্ময় প্রকাশনা
০১১৯০২৯৫৬২১ কুড়িগ্রাম  bangmoy.bd@gmail.com